সর্বশেষ আপডেট : ১ ঘন্টা আগে
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

DAILYSYLHET
Fapperman.com DoEscorts

শুক্রবার মুক্তি হুব্বা’র, আলোচনায় বায়োপিকের ‘হুব্বা শ্যামল’

ডেইলি সিলেট ডেস্ক ::

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের হুগলীর গ্যাংস্টার বা এলাকার ত্রাস হিসেবে পরিচিত শ্যামল দাস। তবে আসল নাম ছাপিয়ে তিনি সকলের কাছে পরিচিত ছিলেন, হুব্বা শ্যামল। হুগলীবাসী ভুলতে পারেননি তার সময়ের সন্ত্রাসের আবহাওয়া। ভুলতে পারেননি তার মানবিক মুখের ছবিও। লোকমুখে প্রচলিত হুব্বা শ্যামল কোথাও যেন এক বিন্দুতে এসে মিলছেন কলম্বিয়ার সেই কুখ্যাত গ্যাংস্টার পাবলো এসকোবারকে। পাবলো যেমন পড়শিদের সাহায্য করতেন। রবিনহুড ইমেজ ছিল তার। হুগলির হুব্বা শ্যামলও ছিলেন সেরকমই। গরিবের মসিহা, রবিনহুড।

এই হুব্বাকে নিয়ে বাংলায় সিনেমা তৈরি করেছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব ব্রাত্য বসু। হুব্বার চরিত্রে দেখা যাবে বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা মোশারফ করিমকে। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দুই বাংলায় একযোগে মুক্তি পাচ্ছে সিনেমাটি।

এই সিনেমায় পুলিশের ভূমিকায় আছেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত। এ ছাড়াও আছেন পৌলমী বসু, শ্রাবণী দাস, সৌমিক হালদার প্রমুখ। ছবিটি প্রযোজনা করেছে ফ্রেন্ডস কমিউনিকেশনস।

তবে এলাকার ত্রাসকে নিয়ে সিনেমা নিয়ে তেমন উৎসাহ নেই হুগলীর মানুষের। এলাকার মানুষের একটাই কথা, সিনেমায় ফিরছে ফিরুক কিন্তু কোন্নগর, রিষরা, কানাইপুর এলাকার আগের সন্ত্রাসের দিন যেন আর না ফেরে।

এদিকে উল্কার গতিতে একদিন উত্থান হয়েছিল হুব্বার। তবে শেষটা ছিল বেশ করুণ। তবে হুব্বা মানেই শুধু সন্ত্রাস নয়, আড়ালে লুকিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোও।

জানা গেছে, হুগলীর কোন্নগরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ধর্মডাঙা এলাকায় থাকতেন শ্যামল। ওই এলাকাতেই তার শ্বশুরবাড়ি। আটের দশকে অপরাধে হাতেখড়ি হয় শ্যামলের। প্রথমে ছিঁচকে চুরি, ছিনতাই. তারপরে ডাকাতি। নয়ের দশকে শ্যামল হয়ে উঠলেন ‘হুব্বা শ্যামল’। প্রধান কাজ, শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন বন্ধ কারখানা থেকে মাল লুঠ করা। তৈরি করেন নিজের দল। এরপর ধীরে ধীরে প্রোমোটারি এবং জমির দালালিতে নামেন তিনি।

হুব্বা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে সেই সময় ওই এলাকার এক পুলিশ কর্তা বলছেন, ‘আমরা জানতাম, পড়াশোনা সেভাবে কোনওদিনই শেখেননি শ্যামল। বাবা একটি কারখানায় কাজ করতেন। সেসময় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।”

রিষড়া, কোন্নগরের এলাকায় প্রথম ‘অপারেশন’ শুরু। তার ‘মস্তানি’ হুগলির ছাড়িয়ে ধীরে ধীরে হাওড়া এবং দুই ২৪ পরগনাতেও ছড়িয়েছিল। কয়েকশো যুবক ছিলেন তার দলে। তাদের মাস মাইনে ছাড়াও ছিল নানা রকম সুযোগ সুবিধা। ফলে দলে নাম লেখাতে চাইত অনেকেই।

পুলিশ সূত্রে খবর, ৩০-৪০টির মতো মামলা ছিল শ্যামলের বিরুদ্ধে। ২০০৮ সালে প্রথম তাকে জেলে যেতে হয় একটি মামলায়। পরে অবশ্য জামিন পেয়ে গিয়েছিলেন। ২০১০ সালে শ্যামল সরাসরি রাজনীতির ময়দানেও নামেন। পুরভোটে রিষড়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী হওয়ার জন্য মনোনয়ন জমা দেন। পরে অবশ্য তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। ২০১১ সালে ফের তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আবার জামিন পান তিনি।

২০১১ সালে চারদিন ‘নিখোঁজ’ থাকার পর তার পচাগলা দেহ মেলে বৈদ্যবাটি খালে। সে সময় তার বয়স ছিল প্রায় ৪৫। গলার নলিকাটা ছিল বলেই জানা যায়।

তৎকালীন পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী সাংবাদিকদের এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, “পুলিশের খাতায় শ্যামল দাস একজন দাগী দুষ্কৃতী। তার নামে খুন, জখম, তোলাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

হুব্বা শ্যামল খুনের পিছনে আরও এক নামকরা দুষ্কৃতীর কাজ ছিল বলেই মনে করা হয়। শ্যামলের ডান হাত বলে পরিচিত নেপুর, অন্তত অভিযোগ ছিল তেমনটাই।

হুব্বা শ্যামলের হাত ধরেই হয় নেপুর উত্থান। পরে সে অপরাধ জগতের আর এক মাথার ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে। শ্যামলকে সরিয়ে দেয়ার অভিযোগ নেপুর বিরুদ্ধে ওঠে সে সময়। হুব্বার দলের বাপ্পা, শঙ্কু, পোলট্রি বুড়ো, সত্য, আফজলরা ধীরে ধীরে নিজেদেরকে গুটিয়ে নেয়। হুব্বা সাম্রাজ্যের পতন হয়, অন্য আরেক জনের সাম্রাজ্যের শুরু হয়।

সিনেমায় কতটা এই জীবনের ঘটনাগুলো উঠে আসে তাই এখন দেখার অপেক্ষা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Comments are closed.

নোটিশ : ডেইলি সিলেটে প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি -সম্পাদক

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত

২০১১-২০১৭

সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি: মকিস মনসুর আহমদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: খন্দকার আব্দুর রহিম, নির্বাহী সম্পাদক: মারুফ হাসান
অফিস: ৯/আই, ব্লু ওয়াটার শপিং সিটি, ৯ম তলা, জিন্দাবাজার, সিলেট।
ফোন: ০৮২১-৭২৬৫২৭, মোবাইল: ০১৭১৭৬৮১২১৪
ই-মেইল: dailysylhet@gmail.com

Developed by: